মুখভর্তি ব্রণওয়ালী কুচকুচে কালো অতি চঞ্চল সদ্য বিবাহিতা গ্রামের সেই মেয়েটি, যে কখনো কথা বলতো না হয় শরমে কিংবা ভয়ে, সে আজ ইজি বাইকে চেপে শ্বশুর বাড়ী থেকে বাপের বাড়ী আসছে। সমস্ত রাস্তা ব্যাপক উদ্দীপনায় পার করার পর যখন সে নিজের শৈশব কৈশোর কাটানো গ্রামে প্রবেশ করলো, তখন এক অজানা শান্তি এবং মায়ার অবয়ব তার কালো মুখখানিকে কিছুটা উজ্জ্বল করে তুললো। গ্রামের রাস্তা ধরে যাওয়ার সময় ইতঃপূর্বে কথা না বলা পাঁচ-সাত বছরে বড় গ্রামের এক দাদার সাথে দেখা মাত্রই সদ্য বিবাহিতা হাসিভরা মুখে বলে উঠলো, “দাদা কেমন আছিস? ”
শুনে মনে হচ্ছিল যেন তারা দুজন দুজনার আপন ভাই-বোন।
দাদা অতিশয় মৃদু হেসে জবাব দিলো, ” ভালো আছি বোন। ” “তুমি কেমন আছো? ”
কিন্তু প্রশ্নের জবাব দিতে না দিতে চলন্ত ইজি বাইক থেকে মেয়েটির উত্তর বাতাসে মিলে গেল।
কিছুক্ষণ বাদে গ্রামের সেই দাদার মাথায় কিছু ভাবনার উদয় হলো।
সে ভাবলো, মানুষ যে বলে বাইরে গেলে নিজের গাঁয়ের (যেখানকার আলো-বাতাসে কেউ বেড়ে উঠে) খড়খুটোকেউ খুব আপন লাগে – কথাটা একেবারে ঠিক।
সবচেয়ে বেশি ঠিক আজন্ম আপন ঠিকানাহীন নারীর জন্য। যারা জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত শুধু আঁকড়ে ধরার চেষ্টাই করে নিজের আপনজনকে, নিজের পরিবেশকে। কিন্তু কেউ তাকে আগলে রাখে না। এমন হাজারটা ভাবনা দাদার মনের ভেতরে যুদ্ধ করতে লাগলো কিন্তু দাদা কিছুই বলতে পারলো না। কেন পারলো না, জানিনা ।,,,,,,,,,,,,,,,,